থমথমে কাঠমান্ডুর সড়কে সেনাদের টহল, বিকেল থেকে কারফিউর ঘোষণা

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
10 September 2025, 05:03 AM
সকাল থেকেই কাঠমান্ডুসহ নেপালের বিভিন্ন অংশে সেনাদের টহল দিতে দেখা গেছে। বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে।

দুই দিনের সহিংস বিক্ষোভের পর নেপালের পরিস্থিতি আজ থমথমে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর কমে এসেছে বিক্ষোভ সংশ্লিষ্ট সহিংসতার ঘটনা।

এই পরিস্থিতিতে দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব নিয়েছে সেনাবাহিনী। ওই উদ্যোগের অংশ হিসেবে আজ বুধবার সন্ধ্যা থেকে নেপালে দেশব্যাপী কারফিউ জারির ঘোষণা দিয়েছে সেনাবাহিনী।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে নেপালের সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট ও বার্তা সংস্থা এএফপি।

Nepal Protest
বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। ছবি: এএফপি

বিকেল ৫টার পর থেকে শুরু হয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এই কারফিউ প্রযোজ্য থাকবে। প্রয়োজনে এর মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।

সকাল থেকেই কাঠমান্ডুসহ নেপালের বিভিন্ন অংশে সেনাদের টহল দিতে দেখা গেছে। বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে।

এমন এক চৌকিতে এএফপির প্রতিবেদককে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেনা বলেন, 'আজকে সব চুপচাপ। সেনাবাহিনী সব সড়কে টহল দিচ্ছে।'

গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে সহিংস বিক্ষোভে সময় পার্লামেন্ট ভবনে অগ্নিসংযোগ করার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কে পি অলি শর্মা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ছাত্র-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল।

যার ফলে ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, সুনির্দিষ্ট মানুষ ও তাদের সহায়-সম্পদের ওপর হামলা, এমন কী, যৌন হয়রানির মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে সেনাবাহিনী দাবি করেছে।

সেনাবাহিনী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত থাকলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কারফিউর মেয়াদ বাড়ানো হবে।

দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সাধারণ জনগণের সহযোগিতামূলক মনোভাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সেনাবাহিনী বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির জন্য শোক প্রকাশ করে।

তারা জনমানুষকে বিক্ষোভ পরবর্তী সময়ে অপরাধ দমনে সমর্থন জুগিয়ে যেতে আহ্বান জানায়।

বিবৃতি মতে, কারফিউর সময় জরুরি সেবা ও নিত্যপণ্যের সরবরাহ বিঘ্নিত হবে না।

Nepal Protest
কাঠমান্ডুতে সেনারা টহল দিচ্ছেন। ছবি: এএফপি

সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, চলমান সংকটের রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে পেতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

পরবর্তীতে বিক্ষোভের নামে ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ বা কোনো ধরনের হামলা হলে সেগুলোকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং নিরাপত্তাকর্মীরা কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে ভিডিও বার্তায় সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগডেল সবাইকে ধৈর্যশীল থেকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, 'দেশে শান্তিপূর্ণ সমাধান আনতে আমি বিক্ষোভ-সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সহিংসতার অবসান ঘটিয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানাচ্ছি।'