চবিতে জামায়াত নেতা সিরাজুল-হাবিবুর ও বিএনপির উদয়কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

By নিজস্ব সংবাদদাতা, চবি
7 September 2025, 12:52 PM
আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে ‘চবিয়ান পাঠচক্রের’ উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতি লালকার্ড প্রদর্শন করেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সংঘর্ষের ঘটনায় বিতর্কিত ভূমিকা পালনের জন্য জামায়াতে ইসলামীর দুই নেতা সিরাজুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান এবং বিএনপি নেতা উদয় কুসুম বড়ুয়াকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে 'চবিয়ান পাঠচক্রের' উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতি লালকার্ড প্রদর্শন করেন। 

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা 'জামায়াতের জমিদারকে লালকার্ড', 'খাজনার বদলে ১৫০০ প্রজার রক্ত নিলি কেন', '৬০ বছরের অধিকার, ক্যাম্পাস কি তোর বাপ-দাদার' ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয় মূল গেটে এই তিনজনের ছবিসহ 'চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জমিদারদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো' লেখা পোস্টার টানিয়ে দেন।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মালিক। আমরা জমিদার, জমিদারের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করবে, এটা আমরা মেনে নেব না।'

1000099236.jpg
ছবি: স্টার

আজকের সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, সিরাজুল ইসলামের 'জমিদার' মন্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও শিক্ষার্থীবিরোধী। সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হলেও তিনি স্থানীয়দের পক্ষ নিয়েছেন। অবিলম্বে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ও জামায়াত থেকে বহিষ্কার করা প্রয়োজন।

চবিয়ান পাঠচক্রের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আব্দুল্লাহ বলেন, 'আমরা দেখেছি কীভাবে বিএনপি নেতা উদয় কুসুম বড়ুয়া স্থানীয় জনগণকে শিক্ষার্থীদের ওপর লেলিয়ে দিয়েছেন। এরপরও তার নামে মামলা হয়নি। একইভাবে জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমান দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে নারী শিক্ষার্থীকে অপবাদ দিয়েছেন। এসব ঘটনায় আমরা বিচার চাই।'

শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সাকিব আহমেদ বলেন, 'জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলামের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যে আমরা বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীকে আহত করার পরও তিনি প্রকাশ্যে বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। আমরা অবিলম্বে তার বিচারের দাবি জানাচ্ছি।'

প্রতিবাদ সমাবেশে চার দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো- বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা উদয় কুসুম বড়ুয়ার বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে, সিরাজুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অব্যাহতি ও জামায়াত থেকে বহিষ্কার করতে হবে, জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমানকে সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষমা চাইতে হবে ও দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে, ছাত্রনেতা হাবিবুল্লাহ খালেদকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে এবং শিবিরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। 

গতকাল সিরাজুল ইসলামকে তার মন্তব্যের কারণে তিনদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।