আফগানিস্তানের ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮১২

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
1 September 2025, 09:12 AM
UPDATED 1 September 2025, 15:32 PM
মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, শুধু কুনার প্রদেশেই নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮০০ ও আহতের সংখ্যা আড়াই হাজার হয়েছে। নানগারহার প্রদেশে আরও ১২ জন নিহত ও ২৫৫ জন আহত হয়েছেন

আফগানিস্তানের ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮১২ হয়েছে। আহত হয়েছেন হাজারো মানুষ।

আজ সোমবার আফগানিস্তানের তালেবান সরকার প্রধান মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। 

মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, শুধু কুনার প্রদেশেই নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮০০ ও আহতের সংখ্যা আড়াই হাজার হয়েছে। নানগারহার প্রদেশে আরও ১২ জন নিহত ও ২৫৫ জন আহত হয়েছেন

গতকাল রোববার রাতে স্থানীয় সময় ১১টা ৪৭ মিনিটে শক্তিশালী এই ভূমিকম্প জালালাবাদ এলাকায় আঘাত হানে।

এর আগে আফগানিস্তানের তালেবান শাসিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল কানি বলেন, 'কুনার প্রদেশে ৬১০ জন নিহত ও এক হাজার ৩০০ জন আহত হয়েছে। অসংখ্য ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।'

'নানগারহার প্রদেশে ১২ জন নিহত ও আরও ২৫৫ জন আহত হয়েছেন', যোগ করেন তিনি। 

বেশিরভাগ আফগান একতলা-দোতলা কাদামাটি নির্মিত বাড়িতে থাকেন। ভূমিকম্পের বিরুদ্ধে এগুলো অত্যন্ত ভঙ্গুর।

কুনার প্রদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হওয়া কয়েকটি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না। জাতিসংঘের অভিবাসন সংক্রান্ত সংস্থা এক বিবৃতিতে হুশিয়ারি দেয়, 'সড়কপথ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় ওইসব গ্রামে পৌঁছানো যাচ্ছে না'।

তালেবান কর্তৃপক্ষ ও জাতিসংঘ ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত এলাকাগুলোতে সমন্বিত উদ্ধার কার্যক্রম চালু করেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এখন পর্যন্ত উড়োজাহাজ ব্যবহার করে ৪০ দফায় মানুষকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে। 

কুনারের নুরগাল জেলার কৃষি বিভাগের এক সদস্য বলেন, দূর-দূরান্তের গ্রামগুলোতে পৌঁছানোর জন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠী সড়কের ওপর পড়ে থাকা জিনিস সরাতে উদ্যোগী হয়েছেন। তবে সবচেয়ে দূরের জায়গাগুলোতে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। সেখানে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাও অনুন্নত।

ইজাজ উল হক ইয়াদ নামের কর্মকর্তা বলেন, 'অনেকেই আতংক ও উদ্বেগে আছেন। নারী ও শিশুরা ভয়ে চিৎকার করছে। আমরা আমাদের গোটা জীবনে এরকম কিছু দেখিনি'

Afghanistan Quake
আফগানিস্তানের হাসপাতালে আহত শিশুরা চিকিৎসা নিচ্ছে। ছবি: এএফপি

তিনি জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান ও পাকিস্তান থেকে ফিরে আসা চল্লিশ লাখ আফগানদের অনেকেই ভূমিকম্প কবলিত গ্রামগুলোতে বসবাস করছিলেন।

'তারা সেখানে তাদের আবাস তৈরি করতে চেয়েছিলেন', বলেন তিনি।

ইউএসজিএস জানিয়েছে, নানগারহার প্রদেশের জালালাবাদ শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে, আট কিলোমিটার গভীরতায় ভূমিকম্প আঘাত হানে।

ভূমিকম্পে নিহতদের উদ্দেশে শোকবার্তা দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

স্থানীয় সময় রোববার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার এই শক্তিশালী ভূমিকম্প জালালাবাদ আঘাত হানে। এর পর অল্প সময়ের ব্যবধানে ৫.২ ও ৪.৭ মাত্রার আরও দুইটি ভূকম্পন অনুভূত হয়। কুনারের পাশাপাশি নানগারহাট ও লাঘমান প্রদেশেও ক্ষয়ক্ষতি সৃষ্টি করেছে এই ভূমিকম্প। পাশাপাশি, কাবুল ও পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশেও এটি অনুভূত হয়।

জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস (জিএফজেড) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার (৬ দশমিক ২ মাইল) গভীরে।