ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে পাঠদান, আতঙ্কে শিক্ষার্থী-শিক্ষক

পার্থ চক্রবর্তী
পার্থ চক্রবর্তী
30 August 2025, 05:49 AM
শিক্ষকরা জানান, ভবনের বেহাল দশার কারণে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমছে।

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার বড়দিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি এতটাই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে যে, যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। ৬০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ও ২৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী চরম ঝুঁকি নিয়ে এই ভবনেই শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

ঐতিহ্যবাহী বড়দিয়া বাজারে ১৯৬২ সালে ৪০ শতাংশ জমির ওপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৯৭ সালে মূল স্কুল ভবনটি নির্মিত হওয়ার পর আর কোনো সংস্কার হয়নি। ভবনের বিভিন্ন স্থানের পলেস্তারা খসে পড়েছে, কোথাও পিলার ও বিমের রড পর্যন্ত বেরিয়ে গেছে। বৃষ্টির সময় ছাদ চুইয়ে পানি চলে আসে শ্রেণিকক্ষে।

bardia_school_4.jpg
ভবনের বিভিন্ন স্থানের পলেস্তারা খসে পড়েছে, কোথাও পিলার ও বিমের রড পর্যন্ত বেরিয়ে গেছে। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী/স্টার

সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ষষ্ঠ শ্রেণির কক্ষটির। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, 'ষষ্ঠ শ্রেণিতে কোনোভাবেই ক্লাস নেওয়া সম্ভব না। শিক্ষকদের কক্ষও ঝুঁকিপূর্ণ। উপর থেকে হঠাৎ পলেস্তারা খসে পড়ে।'

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সানিন মাহমুদ বলেন, 'আমাদের ক্লাসে মাঝে মাঝেই পলেস্তারা খসে পড়ে। আমাদের গায়ে এসে পড়ছে অনেকবার।'

নবম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী তামজিদ মোল্লা বলেন, 'আমাদের শ্রেণিকক্ষের অবস্থা এমন, সেখানে বসে ক্লাস করাই যায় না। বোর্ডের পলেস্তারা খসে পড়ছে। বৃষ্টির সময় পানি পড়ে বইখাতা, এমনকি পরীক্ষার খাতা পর্যন্ত ভিজে যায়।'

লোহাগড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভবনটির ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা বিবেচনায় আমি ইতোমধ্যে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। ভবনটি দ্রুত অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। শিগগির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।'

শিক্ষকরা জানান, ভবনের বেহাল দশার কারণে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমছে।

শিক্ষক খান আশরাফুল হাবিব বলেন, 'অনেক আগেই এই ভবন পাঠদানের উপযোগিতা হারিয়েছে। আমরা মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছি। অবিলম্বে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।'