প্রশান্ত মহাসাগরে প্রথমবারের মতো মস্কো-বেইজিং যৌথ সাবমেরিন টহল

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
29 August 2025, 08:06 AM
দুই দেশের সাবমেরিন জাপান সাগর ও পূর্ব চীন সাগরে টহল দিয়েছে।

প্রথমবারের মতো রাশিয়া ও চীনের সাবমেরিন প্রশান্ত মহাসাগরে যৌথ টহল অভিযান পরিচালনা করেছে।

আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

আগস্টের শুরু থেকে ডিজেল ও বৈদ্যুতিক শক্তিতে চালিত সাবমেরিনের টহল শুরু হয়। এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে।

China Russia Joint Naval Drill
মহড়ার শুরুতে দুই দেশের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ছবি: রয়টার্স

বিবৃতি মতে, ওই টহলের অংশ হিসেবে সাবমেরিন ভলখভ রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তক নৌঘাঁটি থেকে দুই হাজার মাইল পাড়ি দেয়। 

আরও জানানো হয়, দুই দেশের সাবমেরিন জাপান সাগর ও পূর্ব চীন সাগরে টহল দিয়েছে।

এই টহলের বিষয়টি বেইজিং এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি। তবে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ব গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস রুশ সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে গত বুধবার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

চীনের সামরিক বিশেষজ্ঞ ঝাং জুনশে'র বরাত দিয়ে গ্লোবাল টাইমস জানায়, 'প্রথমবারের মতো চীন-রাশিয়ার যৌথ সাবমেরিন টহলে দুই দেশের একে অপরের প্রতি উচ্চ পর্যায়ের কৌশলগত আস্থার ইঙ্গিত রয়েছে। দুই দেশের সাবমেরিনের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষায় শুধু কারিগরী দক্ষতা নয়, আরও অনেক ঘনিষ্ঠ আদান-প্রদানের সংযোগ রয়েছে।'

গ্লোবাল টাইমসকে ঝাং বলেন, 'যৌথ মহড়া ও টহলের মাধ্যমে চীন ও রাশিয়ার নৌবাহিনী একযোগে নৌপথের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।'  

গত কয়েক বছর ধরে চীন-রাশিয়া নিজেদের সামরিক বাহিনীর পারস্পরিক সহযোগিতার মাত্রা বাড়িয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর কিছুদিন আগে রুশ নেতা পুতিন ও চীনের নেতা শি জিনপিং যৌথ বিবৃতিতে দুই দেশের মধে 'সহযোগিতার কোনো সীমা নেই' বলে উল্লেখ করেন।

২০২১ সালে প্রথমবারের মতো চীন ও রাশিয়ার ১০টি যুদ্ধজাহাজ জাপানের মূল ভূখণ্ডের আশেপাশে টহল দেয়। প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমে এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

সে সময় থেকে প্রতি বছরই এ ধরনের যৌথ টহল ও মহড়া আয়োজিত হয়ে আসছে।

China Russia Joint Naval Drill
জাপান সাগরে যুদ্ধজাহাজের মহড়া। ছবি: রয়টার্স

রুশ রাষ্ট্রায়ত্ব গণমাধ্যম তাস গত বুধবার জানায়, এসব টহলের লক্ষ্য 'দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করা, এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, ওই অঞ্চলের সমুদ্রপথের ওপর নজর রাখা এবং সেখানে স্থাপিত চীন-রাশিয়ার অর্থনৈতিক অবকাঠামোকে সুরক্ষিত রাখা।  

সার্বিকভাবে, বেইজিং-মস্কো পারস্পরিক সহযোগিতার সম্প্রসারণ করে চলেছে।

২০২৩ সাল থেকেই আলাস্কার কাছে যৌথ বিমান ও যুদ্ধজাহাজ মহড়ার আয়োজন দেখা যাচ্ছে। গত বছর মার্কিন-রুশ নৌ-সীমানার কাছে চীনের কোস্ট গার্ডের চারটি নৌযান ও রুশ বর্ডার গার্ডের দুইটি নৌযান বেরিং সাগরে টহল দেয়। মার্কিন কোস্ট গার্ড বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে।  

চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন কোস্ট গার্ড জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্র-সংলগ্ন মেরু অঞ্চলের সাগরে চীনের পাঁচটি গবেষণা জাহাজের গতিবিধির ওপর নজর রাখছে।

অপরদিকে, উত্তর আমেরিকার আকাশ সুরক্ষা দপ্তর নোরাড জানিয়েছে, আলাস্কার আকাশসীমায় অন্তত চারটি রুশ নজরদারি উড়োজাহাজ চিহ্নিত হয়েছে।

নোরাড বিবৃতিতে জানিয়েছে, আলাস্কার আকাশসীমার কাছে নিয়মিত রুশ উড়োজাহাজ টহল দেয়। এসব ঘটনাকে ওয়াশিংটন হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে না।

China Russia Joint Naval Drill
অজ্ঞাত সাবমেরিনের ভেতর রাশিয়া ও চীনের কর্মকর্তারা। ছবি: রয়টার্স

ওই বিবৃতি নিরীক্ষা করে একই সপ্তাহে চারবার রুশ বিমানের টহলকে 'অস্বাভাবিক' বলে আখ্যায়িত করেছেন বিশ্লেষকরা।

এ বছরের জুলাই ও এপ্রিলে একবার করে এবং ফেব্রুয়ারিতে দুইবার রুশ বিমান ওই অঞ্চলে টহল দিলেও এত অল্প সময়ের ব্যবধানে এতগুলো ফ্লাইট সাম্প্রতিক সময়ে আর দেখা যায়নি।