গাজায় ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে বাইডেনের চেয়ে ‘নমনীয়’ ট্রাম্প

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
18 March 2025, 08:03 AM
UPDATED 18 March 2025, 14:35 PM
উভয় প্রশাসনই ইসরায়েলের প্রতি ‘ইস্পাত কঠিন’ সমর্থন জুগিয়েছে। তবে বাইডেন সব সময়ই নেতানিয়াহুকে আরও কৌশলী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এসেছেন—জনসম্মুখে ও পর্দার আড়ালে।

বাইডেন প্রশাসনের তুলনায় ট্রাম্প প্রশাসন গাজায় হামলা প্রসঙ্গে ইসরায়েলের প্রতি অনেক বেশি নমনীয় আচরণ করছে।

এমনটাই দাবি করেছেন কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার সংবাদদাতা হেইডি ঝোউ কাস্ত্রো।

আজ মঙ্গলবার আল জাজিরার  বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে হেইডি মত দেন, উভয় প্রশাসনই ইসরায়েলের প্রতি 'ইস্পাত কঠিন' সমর্থন জুগিয়েছে। তবে বাইডেন সব সময়ই নেতানিয়াহুকে আরও কৌশলী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এসেছেন—জনসম্মুখে ও পর্দার আড়ালে।

ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বারবার গাজায় বেসামরিক মানুষ নিহতের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

তার এই মনোভাবে ও দৃষ্টিভঙ্গির সামান্য হলেও প্রভাব পড়ে যুদ্ধক্ষেত্রে। অন্তত বাহ্যিকভাবে।

গাজার কোনো জনবহুল অংশে হামলার আগে লিফলেট বিতরণ, আরবিতে মাইকিং ও সামাজিক মাধ্যমে পোস্টসহ আরও বিভিন্ন উপায়ে করে বেসামরিক মানুষকে সতর্ক করেছে ইসরায়েল।

trump biden (1).jpg
ট্রাম্প ও বাইডেনের ফাইল ফটো

তবে গাজার সর্বশেষ হামলার ক্ষেত্রে এমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

ট্রাম্প নিজেই বলেছেন নেতানিয়াহু আবার যুদ্ধ শুরু করবেন কি করবেন না, এ বিষয়টি নিয়ে তিনি একেবারেই বিচলিত নন।

পাশাপাশি, ট্রাম্প ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, গাজা এখন আর মানুষের বসবাসের যোগ্য নেই। তিনি গাজাকে 'ধ্বংসস্তূপ' বলে উল্লেখ করেন এবং মত দেন, যেসব ফিলিস্তিনি ওই জায়গাকে নিজেদের বাড়ি মনে করে, তাদের আর সেখানে থাকা উচিত নয়।

তিনি তাদেরকে সরে যাওয়ার আহ্বান করে গাজার দখল নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, ট্রাম্প গাজাকে একটি বিলাসবহুল পর্যটক বান্ধব আবাসন প্রকল্পে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা জানিয়ে বলেছেন, তিনি একে 'মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা' হিসেবে গড়ে তুলতে চান।

সব মিলিয়ে বলা যায়, ট্রাম্প প্রশাসন বিগত প্রশাসনের চেয়েও আরও অনেক বড় আকারে ইসরায়েলকে 'অন্ধ সমর্থন' দিয়ে যাচ্ছে।

ভেস্তে গেছে যুদ্ধবিরতি

গাজা
গাজার বেইত লাহিয়া এলাকায় একটি দাতব্য লঙ্গরখানা থেকে ইফতারের জন্য খাবার সংগ্রহ করতে ফিলিস্তিনি শিশুরা অপেক্ষা করছে। ছবি: এএফপি

গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া তীব্র ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২৬ হয়েছে।

হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ শুরুর পর দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। দ্বিতীয় ধাপের বাস্তবায়ন না করে হামাসকে প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়াতে বলে ইসরায়েল। তবে এই দাবি মেনে নেয়নি হামাস।

হামাসের অস্বীকৃতির শাস্তি হিসেবে ১৬ দিন গাজায় সব ধরনের পণ্য প্রবেশ বন্ধ রাখে নেতানিয়াহুর সরকার। এতেও কাজ না হওয়ায় দেশটি আবার গাজাবাসীর ওপর নির্বিচার হামলা শুরু করেছে।

তবে ইসরায়েলের দাবি, 'হামাসের হামলার পরিকল্পনা জেনেই তারা আগে থেকে হামলা শুরু করেছে'। যথারীতি, এই দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীকে 'কঠোর পদক্ষেপ' নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, কারণ হামাস যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে বা বাকি জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি হয়নি।