রাশিয়া কখনো পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ করবে না, পশ্চিমা বিশ্বের এমন অনুমান ভুল: পুতিন

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
6 June 2024, 10:09 AM
UPDATED 6 June 2024, 16:24 PM
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর উচ্চপদস্থ সম্পাদকদের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে পুতিন এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন৷

এক বিরল সাংবাদিক সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন পশ্চিমা বিশ্বকে সতর্ক করেছেন। রুশ ভূখণ্ডের গভীরে হামলা ঘটলে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন ও পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের হুমকি দিয়েছেন তিনি।

বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করে রুশ ভূখণ্ডে হামলার অনুমোদন পাওয়ার ফলে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি বদলে যেতে পারে—এমন আশঙ্কায় রয়েছে মস্কো।

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমা বিশ্বকে সতর্ক করে বলেছেন, 'পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করে রুশ ভূখণ্ডের আরো গভীরে হামলা হলে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের খুব কাছের দেশে প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে পারেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর উচ্চপদস্থ সম্পাদকদের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে পুতিন এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, 'রাশিয়া কখনো পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ করবে না, পশ্চিমা বিশ্বের এমন অনুমান ভুল।'

আপাতত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইউক্রেনকে কিছু শর্ত মেনে চলতে হচ্ছে।

খারকিভের ওপর রাশিয়ার হামলার প্রেক্ষাপটে সীমান্তের ঠিক অপর প্রান্তে রুশ লক্ষ্যবস্তুর দুকে কিছু পশ্চিমা অস্ত্র প্রয়োগের অনুমতি পেয়েছে ইউক্রেন।

পুতিন বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরে বলেন, 'ইউক্রেন যদি আরো শক্তিশালী অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় আঘাত হানে, সে ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বও রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।'

বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটাক্যামস এবং ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মিসাইল সিস্টেম হামলার সময়ে ধ্বংস করা হবে বলে তিনি হুমকি দেন।

পুতিন বলেন, 'উন্নত মিসাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা নিয়ন্ত্রণ ও লক্ষ্যবস্তু বাছাইয়ের কাজে জড়িত থাকেন। সে কারণে মস্কোও বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে।

joy.jpg
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইউক্রেনীয় প্রেসিদেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ফাইল ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের মনে ইউক্রেন সম্পর্কে কোনো আগ্রহ নেই৷ তারা নিজের দেশের গৌরব বৃদ্ধিতে আগ্রহী ।'

'যুক্তরাষ্ট্র ভেতর থেকেই নিজেকে এবং নিজস্ব রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে পুড়িয়ে শেষ করে দিচ্ছে', যোগ করেন তিনি।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেন পুতিন।

তবে জো বাইডেন বা ট্রাম্প, যিনিই অ্যামেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হন না কেন, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তনের আশা করছেন না পুতিন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে লেখা এক চিঠির উল্লেখ করে দাবি করেন, 'পশ্চিমা বিশ্ব চাইলে দুই বা তিন মাসের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতো৷ ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করলেই শান্তি ফেরানো সম্ভব হতো।'

তিনি আরো দাবি করেন, ইউক্রেনের হাতে এক হাজার ৩০০র চেয়েও বেশি রুশ সেনা বন্দি রয়েছে৷ রাশিয়া ছয় হাজার ৪০০র চেয়েও বেশি ইউক্রেনীয় সৈন্যকে যুদ্ধবন্দি করেছে।

রয়টার্স/এপি