ঘুরতে যেতে পারেন যে ৫ চরে

By আশিফ আহমেদ রুদ্র
24 April 2023, 07:19 AM
UPDATED 29 June 2023, 02:22 AM
পদ্মার চর আজকাল প্রায়ই দৃশ্যমান হয়।

নদীমাতৃক বাংলাদেশে যেখানেই আছে নদী সেখানেই আছে চর (মৎস্য বিচরণ ক্ষেত্র)। মূলত নদীর পানি নেমে যাওয়ার পর নিচু জমিগুলোই চর হিসেবে পরিচিত। নদীর দৃশ্য দেখার সঙ্গে সঙ্গে চরে অবলোকন করা যায় নদীকেন্দ্রিক মানুষের জীবনযাপনের চিত্র।

ঘুরতে যাওয়ার মতো ৫টি চর নিয়েই এই আলোচনা।

পদ্মার চর (রাজশাহী)

cr2_0.jpg
ছবি: সংগৃহীত

পদ্মার চর আজকাল প্রায়ই দৃশ্যমান হয়। পদ্মা হারিয়েছে তার পুরানো প্রাণশক্তি। ফলস্বরূপ, চরগুলো তাদের উপস্থিতি আরও ঘন ঘন জানান দিচ্ছে। দেশের বড় চরগুলোর মধ্যে অন্যতম রাজশাহীর পদ্মার চর। আই-ড্যাম থেকে কাছাকাছি নোঙর করা নৌকাগুলোর একটিতে করে সহজেই যাওয়া যায়- দেখা যায় চর সংলগ্ন ছবির মতো নির্জন দৃশ্য। আর অদূরে মূল ভূখণ্ডে থাকা বাঁধ, ভবন ও মানুষ দেয় ছবির মতোই সুন্দরের পূর্ণতা।

যমুনার চর (সিরাজগঞ্জ)

বঙ্গবন্ধু সেতু থেকেই দৃশ্যমান যমুনার চর। অন্যতম বৃহৎ নদী হিসেবে এই নদীরই কদর অনেক এবং দেখা যাবে যমুনার পানি প্রবাহ। যমুনা নদীই যেন নিজে মাঝে মাঝে চরের জন্য পথ তৈরি করে দেয়। যার অনেকগুলো প্রায়ই দেখা যায় শরতের শেষে ও শীতে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায়ই এ নদীর একাধিক চর দৃশ্যমান হয়৷ সুযোগ করে যেতে পারলে চরগুলো অবশ্যই দেখার মতো বিষয়। দৃষ্টি যতদূর যায় কেবলই জলের স্রোত আর প্রকৃতিকে একটু অন্যভাবে দেখার সুযোগ দেয় যমুনার এসব চর।

পদ্মার চর (পাবনা)

রাজশাহীর অদূরে পাবনা জেলার আশেপাশে পদ্মার বেশ কয়েকটি ছোট চর রয়েছে। যেমন সারার (ঈশ্বরদী) চরটিও তীরের খুব কাছেই। পদ্মার এই অংশে পানির স্তর খুব দ্রুত নিচে নেমে যায় এবং শরতের শেষের দিকে চরগুলোতে ঘুরতে যাওয়া যায়। সারার ছোট চরে দাঁড়িয়ে দেখা যায় নদীর দুই পাড়ের স্বচ্ছ ও বাধাহীন দৃশ্য। একপাশে পাবনা ও অন্যপাশে কুষ্টিয়া এবং অবশ্যই দুটি সেতু—লালন শাহ সেতু এবং হার্ডিঞ্জ সেতু একটি অপূর্ব দৃশ্যর চিত্রায়ন করে। জেলার অন্য প্রান্তে, সুজানগরের কাছে যাওয়া যায় আরও বেশ কয়েকটি চরে। একইসঙ্গে এই চরে আরও পেয়ে যাবেন ঘন কাশফুল।

মেঘনার চর (নোয়াখালী)

নোয়াখালী পেরিয়েই মেঘনা নদী পড়েছে বঙ্গোপসাগরে। ফলে, মেঘনা নোয়াখালী জেলার পাশ দিয়ে প্রবাহিত হলেও এই পরিধির মধ্যেই রয়েছে দেখার মতো বেশ কয়েকটি চর। তন্মধ্যে, বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এই অঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম আয়েশার চর। জেলার দক্ষিণে হাতিয়া উপজেলার কাছে অবস্থিত এই চরটি বসবাসের জন্য যথেষ্ট উপযোগী যা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা চলছে। বালুকাময় এবং বিচ্ছিন্ন এলাকা-চরের স্বাভাবিক এই বৈশিষ্ট্যের বিপরীতে এই চরটি সবুজ এবং ফলনশীল। ধারণা করা হয়, এই চরটি রাতারাতি হারিয়েও যাবে না।

পদ্মা-মেঘনা মোহনার চর (চাঁদপুর)

অবস্থানগত কারণে চাঁদপুর জেলার কাছেই রয়েছে বেশ কিছু চর। পদ্মা ও মেঘনা চাঁদপুরের কাছে একত্রিত হয়ে এমন এক মোহনা তৈরি করেছে যা নদীমাতৃক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব নিদর্শন। এই মোহনার চারপাশে রয়েছে বিভিন্ন আকারের অসংখ্য চর-বোরো চর, বাহের চর, খুনের চর। রয়েছে সুপরিচিত বালুর চর, যা 'মিনি কক্সবাজার' নামেও পরিচিত। কল্পনার মতোই, মোহনা জলসীমার অন্তহীন এক দৃশ্য উপস্থাপন করে যা অনেকটাই সমুদ্রের মতো।

চরগুলো সহজেই বিচরণযোগ্য এবং বেশিরভাগই জনবসতিপূর্ণ। তাই এক ঝলকেই চরের জীবনধারার সঙ্গে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিবে মনে রাখার মতোই এক অভিজ্ঞতা।

অনুবাদ করেছেন তানজিনা আলম