কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ, স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত ব্রহ্মপুত্র নদের দুর্গম চরের মানুষ

এস দিলীপ রায়
এস দিলীপ রায়
27 May 2021, 03:01 AM
UPDATED 27 May 2021, 09:09 AM
চর কড়াই বরিশাল কমিউনিটি ক্লিনিকটি ব্রহ্মপুত্র নদের দুর্গম চরের সাড়ে সাত হাজার মানুষের একমাত্র স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। গত ছয় মাস ধরে বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন চরবাসি।

চর কড়াই বরিশাল কমিউনিটি ক্লিনিকটি ব্রহ্মপুত্র নদের দুর্গম চরের সাড়ে সাত হাজার মানুষের একমাত্র স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। গত ছয় মাস ধরে বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন চরবাসি।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবগত থাকার পরও নিচ্ছেন না কোনো ব্যবস্থা।

চরের বাসিন্দারা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গত বছর ১৫ ডিসেম্বর এই কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার) মশিউর রহমান অন্যত্র বদলি হওয়ায় এটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে ক্লিনিকটি আর খোলা হয়নি।

সিএইচসিপি মশিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, চর কড়াই বরিশাল কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বদলি হয়ে তিনি উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ কমিউনিটি ক্লিনিকে যোগদান করেছেন।

চর কড়াই বরিশালে নতুন সিএইচসিপি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছেন বলেও যোগ করেন তিনি।

চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গয়ছুল আলম মণ্ডল বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে সাড়ে ১৪ হাজার মানুষের জন্য দুটি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এর একটি গত ছয় মাস ধরে বন্ধ। ক্লিনিকটি চালু করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলেছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। ক্লিনিকটি বন্ধ থাকায় চরের মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।’

চর কড়াই বরিশাল কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য জমিদাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি চরবাসির স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসা।’

এই ক্লিনিকের জন্য বরাদ্দ করা সরকারি ওষুধ কোথায় যাচ্ছে, এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বন্ধ থাকা ক্লিনিকটি চালুর কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না।’

চরের অধিবাসী মালেকা বেওয়া (৬০) বলেন, ‘ক্লিনিক যখন চালু ছিল তখন স্বাস্থ্যসেবা পেতাম, ওষুধ পেতাম। এখন ডাক্তার দেখাতে পায়ে হেঁটে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার দূরে চর শাখা হাতীতে যেতে হচ্ছে।’

চিলমারী উপজেলা হেলথ ইন্সপেক্টর (এইচআই) বাবুল কুমার সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সিএইচসিপি মশিউর রহমান অন্যত্র বদলি হওয়ার পর এই ক্লিনিকটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মশিউর রহমান ঢাকা থেকে তার বদলির আদেশের ব্যবস্থা করেন। এতে আমাদের কোনো সম্মতি ছিল না।’

কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। খোঁজ নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি পুনরায় চালু করবেন।